রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৩১ অপরাহ্ন
ফুয়াদ খন্দকার, জামালপুর ।
জামালপুরে চলমান আমন মৌসুমে লক্ষ মাত্রার ধান উৎপাদন নিয়ে ভীষণ শঙ্কিত কৃষক । এর প্রধান কারন হিসেবে কৃষকরা বলছেন দ্রব্য মূল্যের উর্ধগতি । বিশেষ করে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় এর প্রভাব পরেছে কৃষিতে। পাশাপাশি সব ধরনের সারের দাম বৃদ্ধি ও সঙ্কট দেখা দিয়েছে । প্রয়োজনের তুলনায় সার কম পাওয়া এবং সঠিক সময়ে তা প্রয়োগ করতে পারছেন না বলে অভিযোগ করছেন কৃষকরা । জামালপুর জেলায় আমন মৌসুমে ইউরিয়া সারের চাহিদা রয়েছে ৮ হাজার ৭৬০ মেট্রিক টন । এর মধ্যে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে মাত্র ৪ হাজার ৩৬৫ মেট্রিক টন । প্রায় ৫০ ভাগ বরাদ্দ ঘাটতি রয়েছে । তবে বাকী ৫০ ভাগ সার পর্যায়ক্রমে বরাদ্দ দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক জাকিয়া সুলতানা । এ দিকে জামালপুর সদর উপজেলার রানাগাছা ইউনিয়নে সার সঙ্কটের অভিযোগ পাওয়া গেছে । সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে স্থানীয় চেয়ারম্যান, উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ ও কৃষি বিভাগের তত্ত্বাবধানে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে কৃষকদের সার দেওয়া হচ্ছে । কৃষকদের অভিযোগ তারা সার পাচ্ছেন না । যেটুকু পাচ্ছেন প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। তারা বলছেন এখন সার প্রয়োগের সঠিক সময় এই সময়ে ক্ষেতে সার দিতে না পারলে আমাদের ফসল নষ্ট হয়ে যাবে । সার সঙ্কটের বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার লিটুস লরেন্স চিরান বলেন, সারের কোন সঙ্কট নেই । গত কয়েক দিন বৃষ্টি হওয়ায় সবার একসাথে সারের প্রয়োজন হয়েছে । এর সাথে কোন একটি সুবিধাবাদী মহল সার সঙ্কটের অপপ্রচার চালাচ্ছে । তবে আমরা সুশৃঙ্খল ভাবে সার দেওয়ার জন্য উপজেলা প্রশাসনের সমন্বয়ে এই ব্যবস্থা করেছি। কৃষকরা অনেক আক্ষেপের সুরে বলেন, ধান চাষ করে আমাদের এখন আর লাভ হয় না । কৃষি নির্ভর প্রতিটি জিনিসের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে । যেমন জমি চাষ, সার, কীটনাশক, সেচ, শ্রমিক ইত্যাদি । প্রতি মণ ধান উৎপাদনে খরচ প্রায় তেরশ টাকা। ভরা মৌসুমে ধানের দাম থাকে সর্বোচ্চ এগারোশ টাকা । কৃষকদের প্রতি মণ ধান বিক্রিতে লস হচ্ছে দুইশ টাকা। কৃষকরা আরও বলেন আমরা নিজেদের জমি চাষ না করলে খাব কি? শুধুমাত্র নিজের ও পরিবারের সদস্যদের শ্রমের মূল্যটুকু কাজে লাগছে । বাংলাদেশে প্রধানত দুটি বোরো ও আমন মৌসুমে বেশির ভাগ ধান উৎপাদিত হয়। বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হলেও এই অবস্থা চলমান থাকলে আমাদের দেশে খাদ্য ঘাটতি থেকে যাবে বলে মনে করছেন অনেকে । এবারের মৌসুমে জেলায় ১ লক্ষ ৯ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে । এ পর্যন্ত ৯১ শতাংশ জমিতে চাষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা কৃষি অফিস ।
All rights reserved © 2020-2024 dainikparibarton.com
অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।